প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে অবশ্যই কিছু কৌশল অবলম্বন করতে হবে
বিজয়ীরা ভিন্ন কোনো কাজ করে না,
বাংলার জমিন ডেস্ক :
আপলোড সময় :
০৯-০৮-২০২৩ ০৬:১৯:০৮ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
০৯-০৮-২০২৩ ০৬:২০:৪১ অপরাহ্ন
ফাইল ছবি
বর্তমানে সকল চাকরি পরীক্ষাতেই ব্যাপক প্রতিযোগিতা দেখা যায়। তাই আপনাকে এই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে অবশ্যই কিছু কৌশল অবলম্বন করতে হবে। মনে রাখতে হবে ‘বিজয়ীরা ভিন্ন কোনো কাজ করে না, বরং তারা একই কাজ ভিন্ন উপায়ে বা ভিন্ন কৌশলে করে। এখন চাকরির যে পরীক্ষাগুলো হয় সেগুলো মোটা দাগে ভাগ করলে বলা যায় চার ধরনের চাকরি পরীক্ষা হয়। (১)বিসিএস এবং পিএসসির মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত নন ক্যাডার চাকরি (২) প্রাইমারি (৩) নিবন্ধন ও (৪) ব্যাংক।
প্রতিযোগিতামূলক চাকরি পরীক্ষার প্রস্তুতি কখন নিবেন: আমার মতে আপনার অনার্স শেষ হবার সাথে সাথে আপনার প্রতিযোগিতামূলক চাকরি পরীক্ষার প্রস্তুতি ও শেষ হওয়া ভালো। অনার্স পাস করার সঙ্গে সঙ্গে যদি আপনি চাকরি পরীক্ষার প্রস্তুতি শেষ করতে চান, তাহলে পড়াশোনা কিন্তু অনার্স ৩ য় বর্ষ অথবা চতুর্থ বর্ষের শুরু থেকেই শুরু করতে হবে। একাডেমিক পড়ার পাশাপাশি অবসর সময়ে আপনি চাকরির পড়া পড়বেন। আপনাকে অনার্স তৃতীয় বা চতুর্থ বর্ষে থাকতেই পড়াশোনা করতে বলার কারণ, আপনি আগে থেকে না পড়লেও আপনার বন্ধু-বান্ধবী কিন্তু ঠিকই আগে থেকে পড়াশোনা শুরু করেছে। তাই প্রতিযোগিতায় টিকতে হলে আপনাকেও পড়া শুরু করতে হবে।
আজকের পবে আমরা বিসিএস প্রস্তুতি কিভাবে নিবেন সেটি আলোচনা করব:
বিসিএস এ ৩টি ধাপ। প্রথম ধাপ প্রিলিমিনারি-২০০, ২য় ধাপ লিখিত-৯০০, ৩য় ধাপ ভাইভা-২০০
(১) প্রতিযোগিতামূলক যে কোনো পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য আপনার প্রথম কাজ হল আপনি যে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিবেন সে পরীক্ষায় কয়টি ধাপ আছে। কোন কোন সাবজেক্ট থেকে কত নম্বর এর প্রশ্ন থাকে সেটি জানা এবং সেভাবে প্রস্তুতি নেওয়া। বিসিএস এর ক্ষেত্রে প্রিলিমিনারি’তে কয়টি সাবজেক্ট আছে, কোন সাবজেক্ট থেকে কত নম্বর এর প্রশ্ন থাকবে সেটি আপনাকে জানতে হবে। আমি একটি পেজ এ বিসিএস প্রিলির ১০টি সাবজেক্ট এর নাম এবং কোন সাবজেক্ট থেকে কত নম্বর আসে সেটি লিখে পড়ার টেবিলে রাখতাম।
(২) তারপর আপনি ১০টি সাবজেক্ট এর জন্য আবার আলাদা আলাদা পেজ এ ঐ সাবজেক্ট এর বিস্তারিত তথ্য লিখে টেবিলের সামনে রাখতে পারেন। যেমন: বিসিএস প্রিলিতে গণিতে নম্বর আছে ১৫। গণিতকে আবার ৩ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। পাটিগণিত-৩, বীজগণিত-৬, জ্যামিতি-৬। এইটা লিখে আপনার লাভ কি হল? লাভ হল এইটা যে, আপনি জানতে পারলেন গণিতে ১৫ নম্বরের মধ্যে কোন অংশ থেকে কত নম্বর থাকে এবং এটিও জানলেন যে পাটিগণিত থেকে কম নম্বর থাকবে। আবার পাটিগণিতে ৩ নম্বরের জন্য ৬টি অধ্যায় করতে হবে সেটিও আপনি জানবেন। এভাবে সব সাবজেক্ট জানবেন।
(৩) ১০টি সাবজেক্ট এর সিলেবাস ২/৩ বার করে রিডিং পড়বেন
(৪) রুটিন করে পড়াশোনা করা। আমার সাজেশন হল প্রতিদিন রুটিন না করে আপনি ১ মাস ব্যাপী রুটিন করতে পারেন। উদাহরণস্বরুপ আপনার টার্গেট আপনি ৩ মাসে বিসিএস প্রিলির ১০টা সাবজেক্ট একবার করে রিডিং পড়ে শেষ করবেন। তাহলে প্রথম ১ মাস আপনি প্রতিটি বইয়ের ৩৩% পড়া শেষ করার টাগেট রাখবেন।
(৫) সাজেশন ভিত্তিক পড়াশোনা করতে হবে। সাজেশনটি হল এইরকম যে, পাটিগণিতে ৩নম্বরের জন্য আপনাকে ৬টি অধ্যায় করতে হবে।যে স্টুডেন্ট গণিতে দূর্বল সে তো ৬টি অধ্যায় করতে পারবেনা। আমার সাজেশন হল সেই স্টুডেন্ট গত ৩৫-৪৪তম বিসিএস এর প্রশ্ন দেখে উনি জানবেন যে পাটিগণিতে ৬টির মধ্যে কোন ৩টি অধ্যায় থেকে প্রায় প্রতি বছর প্রশ্ন আসে, তিনি প্রথমবার গণিত করার সময় ঐ ৩টি অধ্যায় করেই পাটিগণিত শেষ করবেন। ২য় বার যখন করতে যাবেন তখন তিনি আরো ১টি অধ্যায় বাড়িয়ে এবার ৪টি অধ্যায় করবে।
(৬) যে টপিকস পড়া শুরু করবেন সেটি শেষ না করে অন্য টপিকস এ যাবেন না। আমার সাজেশন হল আপনি যখন শতকরা শুরু করবেন তখন ঐ টি শেষ না করে অন্য কোন সাবজেক্ট পড়তে যাবেন না।
(৭) সব বই একবার করে পড়া শেষ হওয়া মাত্রই আপনি জব সলিউশন পড়া শুরু করবেন। জব সলিউশন হল চাকরি পাওয়ার তাবিজ। মানে এটি হাফেজ এর মত মুখস্থ করতে হবে। পুরো জব সলিউশন মিলে প্রশ্ন আছে মোটামুটি ২৫ হাজার এর মত। ১০-৪৫তম বিসিএস এর প্রশ্ন আছে ৪৫০০টি এবং বিগত ১০ বছরের নন ক্যাডার এর প্রশ্ন ২০ হাজার এর মত। এই মোট ২৪,৫০০/২৫,০০০ প্রশ্ন আছে। প্রতিদিন ৫০০টি করে এমসিকিউ পরলে জব সলিউশন শেষ করতে সময় লাগবে ৫০দিন। প্রতিদিন ৫০০টি করে না পারলেও সন্ধ্যার পর থেকে শুরু করলে প্রতিদিন ঘুমানোর আগে ৩০০টি করে এমসিকিউ পড়া সম্ভব। এভাবে টার্গেট রাখলে ৩ মাসে শেষ হবে। টার্গেট না রাখলে ৩ বছরেও শেষ হয় না।
(৮) জব সলিউশন এর রিসেন্ট প্রশ্ন আগে পড়বেন। মানে আপনি জব সলিউশন থেকে আগে ২০২৩ সালের প্রশ্নগুলো পড়বেন। তারপর ২০২২, ২০২১ এভাবে বিগত ১০ বছরের প্রশ্ন মুখস্থ রাখবেন।
(৯) প্রথমবার পড়ার সময় আপনি ব্যাখ্যা ছাড়া শুধু সালের প্রশ্ন গুলি পড়বেন। ২য় বার রিভাইজ করার সময় আপনি ব্যাখ্যা সহ পড়বেন।
(১০) জব সলিউশন পড়ার সময় আগে বিগত বছরের বিসিএস এর প্রশ্ন পড়বেন এবং বুঝার চেষ্ঠা করবেন যে কোন সাবজেক্ট থেকে বা কোন অধ্যায় থেকে কি ধরনের প্রশ্ন আসে পরীক্ষায়।
(১১) যেসকল প্রশ্ন মনে থাকতে চাচ্ছে না সেটি আলাদা করে দাগিয়ে রাখবেন। পরীক্ষার ২/১দিন আগে শুধু দাগিয়ে রাখা প্রশ্ন পড়বেন। যে প্রশ্ন আপনি পরীক্ষার ২/১ দিন আগে না পড়লেও উত্তর দিতে পারবেন সেসকল প্রশ্ন পড়ে সময় নষ্ট করবেন না।
(১২) জব সলিউশন থেকে আপনি যখন বিগত বিসিএস এর প্রশ্ন পড়বেন তখন মুখস্থ প্রশ্নগুলো আগে পড়ে নিবেন। সাধারণ জ্ঞান, বাংলা এসব প্রশ্ন হল মুখস্থ প্রশ্ন। গণিত এবং ইংরেজি পরে পড়তে পারেন। আপনি যখন ইংরেজি পড়বেন তখন ১০,১১,১২,১৩,১৪তম বিসিএস এর শুধু ইংরেজি ই পড়বেন। এবার যখন গণিত পড়বেন তখন ১০,১১,১২,১৩,১৪তম বিসিএস এর শুধু গণিত ই পড়বেন।
"অবশেষে সকল চাকরি যোদ্ধাদের জন্য শুভ কামনা রইল" সুত্র-ছবি: চ্যানেল 24
নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Jamin
কমেন্ট বক্স